অনুসর্গ কাকে বলে?
অনুসর্গকে আচার্য সুনীতিকুমার পরসর্গ, কর্মপ্রবচনীয়, সম্বন্ধীয় বলে অভিহিত করেছেন। এই নামকরণের কারণ,কতকগুলি অব্যয় বা অব্যয়জাতীয় পদ বাংলায় বিশেষ্য বা সর্বনামের পরে অবস্থান করে বিভক্তির কাজ করে। এজন্যই এরা অনুসর্গ বা পরসর্গ। অনুসর্গগুলি আসলে বিভক্তি না হয়েও বিভক্তিসূচক অব্যয় পদ। অন্য পদের পরে ব্যবহৃত হয় বলেই এদের নাম অনুসর্গ (Post-position)। যথা—দ্বারা, দিয়া, দিয়ে, কর্তৃক, হইতে, থেকে, করে, চেয়ে, চাইতে ইত্যাদি অব্যয় বা অব্যয়জাতীয় পদ অন্য পদের পরে বসে ক্রিয়ার সঙ্গে তাদের সম্বন্ধ নির্দেশ করে। এজন্য এদের কারক-বিভক্তির মর্যাদা দেওয়া হয়ে থাকে।
উপসর্গ ও অনুসর্গের পার্থক্যঃ
উপসর্গ বিষয়ক আলােচনায় উপরে দেখানাে হয়েছে যে, উপসর্গ এমন কতকগুলি অব্যয়, যারা ধাতু বা শব্দের পূর্বে ব্যবহৃত হয়ে ধাতুর অর্থের পরিবর্তন ঘটায় এবং শব্দার্থেরও বৈচিত্র্য ঘটায়, নতুন শব্দসৃষ্টিতে কার্যকর ভূমিকা নেয়। কিন্তু অনুসর্গ সবই অব্যয় নয়, কিছু অব্যয়, কিছু অব্যয়জাতীয় এবং এগুলি বিভক্তি নয়, বিভক্তিস্থানীয়। এরা নামপদ বা সর্বনাম পদের পরে বসে, কিন্তু উপসর্গের অবস্থান ধাতু বা শব্দের পূর্বে। অনুসর্গ কারক- -নির্দেশক, কিন্তু উপসর্গের কারক-বাচকতা নেই।
0 Comments